হাটুর জয়েন্টে ব্যথার ব্যায়াম

প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করা হবে হাঁটু জয়েন্ট এর ব্যথার ব্যায়াম, হাঁটু ব্যথার চিকিৎসা, হাঁটু ব্যথার ট্যাবলেট, হাঁটু ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।  আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেলটি গুরুত্বপূর্ণ ভাবে পড়ুন। 

হাটুর জয়েন্টে ব্যথার ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন হাঁটু ব্যথার জন্য ফিজিও চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী। খুব তাড়াতাড়ি ব্যাথা থেকে মুক্তি পাবেন। ব্যায়ামের মাধ্যমে ব্যথার নমনীয়তায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

 

বর্তমান সময়ে হাঁটুর ব্যাথা প্রায় ঘরে ঘরেই ধরলে চলে।পূর্বে বয়স বাড়লে হাঁটুর ব্যথায় ঢোকার কথা শুনতে পেতাম।  তবে, এখন কমবয়সহ হাজার মানুষের হাঁটুতে ব্যাথা হচ্ছে।  বছর ত্রিশেও অনেকের হাঁটু ব্যথায় কাবু হয়ে যাচ্ছে।  আর এর সাথে বাড়ছে বাড়ির বাড়ির কাজের চাপ।



খাটে বসেই কম্পিউটারের সামনে কাটছে ঘন্টা পর ঘন্টা।  ফলে হাঁটুতে ব্যথা আরো দিনের দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।  হাঁটুর ব্যাথা সঙ্গে জড়িত আছে কিছু রোগ।তবে হাঁটু তখনই ভালো থাকবে যখন আপনি নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করে থাকবেন।  এতে করে হাঁটুর ব্যথা পুরোপুরি সেরে হয়তো যাবে না তবে নিয়মিত ব্যায়াম গুলি নিয়ম অনুযায়ী করে থাকলে ব্যথার পরিসর ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এবার দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক কোন ব্যায়ামে করলে হাঁটুর জয়েন্টের ব্যথা কমবে।


লেগ রেজ 

মাটিতে শুয়ে দুই হাতের তালু টানটান করে মেঝের উপরে রাখুন। এরপর বারবার বাম পা আস্তে আস্তে উপরের দিকে তুলুন। মাটি থেকে অন্ততপক্ষে ৪৫ ডিগ্রি কোণে তুললে ভালো হয়। এভাবে ৫ সেকেন্ড পা তুলে রাখুন। এরপর আস্তে আস্তে পা নামিয়ে আনবেন।

এভাবে প্রথম দিকে দুই পায়ে চারবার করে এই ব্যায়াম করতে পারেন। প্রথমে চাইলেই আপনি অনেক কয়বার করতে পারবেন না।  এতে করে পায়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং আপনার প্রচন্ড কষ্ট হতে পারে তাই আস্তে আস্তে করে প্রতিদিন ৮-১০ বার পর্যন্ত এই লেগ রেজ  ব্যায়াম করতে পারেন। 

  

লায়িং হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচ:

মেঝেতে টানটান হয়ে শুয়ে বাম পা উপর দিকে তুলুন এমন ভাবে তুলবেন মাটির সঙ্গে পা ৯০ ° কোণে থাকবে।  দুই হাত নিচে রেখে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। এরপর বাহাদুর ধীরে ধীরে বুকের নিকট আনার চেষ্টা করুন। এভাবে 30 সেকেন্ড রেখে আবার স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে যান। এভাবে দুই পায়ে এ ব্যায়াম করতে পারেন। ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত পা ধরে ব্যায়াম করতে পারেন। 



হাফ স্কোয়াট:

হাফ স্কোয়াড পড়তে হবে দাঁড়িয়ে প্রথমে হাত দুটি সামনের দিকে তুলতে হবে আপনি চাইলে হাত দুটো মুঠো করে ধরতে পারেন। এরপর অল্প অল্প করে বসার চেষ্টা করুন। পুরোপুরিভাবে বসবেন না। অর্ধ ভঙ্গি বসার ভঙ্গি পর্যন্ত রেখেই আবার উঠে পড়ুন। এইভাবে অন্ততপক্ষে দশটি সেট পর্যন্ত করতে পারেন। এ ধরনের স্কোয়াড করতে সাধারণত ব্যাথা হওয়া উচিত নয়।  যদি কারো ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে প্রথমে এ ধরনের ব্যায়াম করার জন্য ব্যাথা হয়ে থাকতে পারে। যদি কারো ব্যাথা হয়ে থাকে তাহলে প্রাথমিক কথা বলা হয়। নিয়মিত হাফ স্কোয়াট  ব্যায়ামের অভ্যাস করলে ব্যথা হবে না। আরে



হাঁটুর ব্যথার চিকিৎসা

সাধারণত বয়স্ক লোকেরা হাঁটুর ব্যথায় রোগে বেশি ভুগতে থাকেন। তবে শিশু বা তরুণরাও মোটে এ ব্যাথা থেকে দূরে নয়। ওষুধে অনেক সময় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাই ঘরোয়া উপায় হোক হাঁটুর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তিন থেকে চার টুকরো বরফের আইসপ্যাক টাওয়ালে পেঁচিয়ে হাঁটুর ব্যাথার নির্দিষ্ট স্থানে চেপে ধরতে হবে 10 থেকে 15 মিনিট। এরপর মালিশ করুন প্রতিদিন দু থেকে তিনবার পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। 

মেসেজ থেরাপি তিন থেকে চার চা চামচ অলিভ অয়েল হালকা গরম করে ব্যথার স্থানে আলতো করে হাত দিয়ে 10 থেকে 15 মিনিট ধরে মেসেজ করুন। এই মেসেজ থেরাপি দিনে ২ থেকে ৩ বার করতে পারেন।


হিট থেরাপি গরম পানির মধ্যে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাটু ভিজিয়ে রাখুন এক্ষেত্রে হট ওয়াটার পট বা  ব্যাগ ও ব্যবহার করতে পারেন। এই হট থেরাপি দিনে দুই থেকে তিনবার করতে পারেন। 


দু কাপ দুধের সাথে এক টেবিল চামচ বাদাম, সামান্য হলুদের গুড়া, আখের গুড় এর গুঁড়া  একসাথে মিশিয়ে ফোটাতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত মিশ্রণের পরিমাণ অর্ধেক হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত। মিনিমাম ২ মাস পর্যন্ত প্রতিদিন একবার এই সেক  খেতে হবে। 



হাঁটু ব্যথার ট্যাবলেট

হাঁটু ব্যথার ট্যাবলেটের নাম বলে দিচ্ছি। একটি অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বেদনাশক ওষুধ ডিক্লোমল ট্যাবলেট। এই নন-স্টেরয়েডাল ওষুধটি ব্যাথা জনিত লক্ষণের ভালো কাজ করে যেমন: প্রদাহ, ব্যথা, জ্বর এবং ঘাট বা জয়েন্টের ফোলা ভাব উপশম করতে এই ওষুধটি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ওষুধটি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রা‌ইটিস, অ্যাঙ্কাইলুজিং স্পন্ডিলাইসিস এবং মারাত্মক মাসিকের ব্যথার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।


হাঁটু ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

হাঁটুর ব্যথার কারণ হয়ে থাকে বিশেষ করে ঘন্টার পর ঘন্টা কম্পিউটার ল্যাপটপ ব্যবহার করায় এর সাথে বাড়ছে পিঠের ব্যথা ও কোমরের ব্যথা ও। প্রধানত তিনটি কারণে হাটু ব্যথা বেশি হয়ে থাকে আঘাত জনিত কারণে ক্ষয় জনিত এবং বাতজনিত। তাছাড়াও হাটুর জয়েন্ট এর পাশে কার্টিলিস নামের যে নরম হার থাকে সেখানে ক্ষয় দেখা দিলে হাঁটুর ব্যথা হয়। 


বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে হাঁটুতে ব্যাথা হলে নির্মিত ব্যথার ওষুধ সেবন করা ঠিক নয় এতে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় আরো নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনি ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে ঘরোয়া উপায়ে ব্যায়াম করে ব্যথা নির্মূল করতে পারেন অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

 

শেষ কথা

উপরের আলোচনা থেকে আপনারা অনেকটাই ধারণা পেয়েছেন।  আমরা আপনাদের প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ তুলে ধরতে পেরে খুবই আনন্দিত হই। এছাড়াও আরো অন্যান্য সব তথ্য জানতে আমাদের ওয়েব সাইটটি ভিজিট করুন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে ওয়েব সাইটের নিচে গিয়ে কমেন্ট করুন ধন্যবাদ। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url