সিজারের পর ব্যাথা হলে করণীয়
প্রিয় ভিউয়ার্স আজকে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আলোচনা করা হবে সিজারের পর ব্যাথা হলে করণীয় কি ?সিজারের পর ইনফেকশন হলে করনীয় কি? সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর উপায়, সিজারের পর কোমর ব্যথা হলে কি করতে হবে, সিজারের পর পেট কমানোর উপায় ,এসব বিষয় বিস্তারিত জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সিজারের পর ব্যাথা হলে করণীয়
সিজার বা অস্ত্রপচার অপারেশনের সাহায্যে সন্তান প্রসবের পর মহিলাদের অনেক সময় তীব্র মাথা ব্যথা ও কোমর ব্যথা হয়। মায়েদের মেরুদন্ডে সুঁই ফুটিয়ে চেতনা নাশক ইনজেকশন ব্যবহারের কারণে মাথাব্যথা দেখা দেয়। পূর্বে অবাস করতে মোটা সুঁই ব্যবহার করা হতো বিধায় মাথা ব্যথা পরিমান বেশি ছিল। বর্তমান সময়ে আধুনিক এবং সূক্ষ্ম সুঁই ব্যবহার করার ফলে মাথা ব্যথার হাড় এগারো শতাংশ। পূর্বের হাড়ের অংশ ছিল ৬৬ শতাংশ।
এধরনের ব্যথার মূল কারণ হলো মেরুদন্ডের ভেতর স্পাইনাল কার্ড অপেক্ষা কিন্তু বড় ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় এই ব্যথা হয়। সুঁইয়ের আকার আকৃতি ছাড়াও অন্যান্য কারণে এ মাথা ব্যাথা হতে পারে। বারবার সুই ফোটানো কমজোর পানি শূন্যতা বা আগে থেকেই কমবেশি মাথা ব্যাথা হয়ে থাকতো এগুলো অন্যতম কারণ।
সাধারণত এ ধরনের মাথাব্যথা সিজার করা প্রথম দিন বা দ্বিতীয় দিন থেকে দেখা দেয়। এই ব্যথা সাত দিনের কম স্থায়ী হয়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে এই ব্যথার স্থায়িত্ব 14 দিন পর্যন্ত হতে পারে। এ ধরনের ব্যথা যদি সাধারণত কার্যক্রমে সমস্যা হয় ক্রমাগত ভাবে বাড়তে থাকে তাহলে চিকিৎসকেরপরামর্শ নিতে হবে।
এ ধরনের মাথাব্যথা দু`দিক দিয়ে হয়ে থাকে মাথার সামনে ও পিছনের দিক। অনেক সময় ঘাড় শক্ত হয়ে থাকে কখনো কখনো ব্যথা দুই কানের পর পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকে ব্যথাগুলো বাড়ে দাঁড়ানো অবস্থায়, শুয়ে থাকলে, কিছুটা পরিশ্রম করলে। এই মাথাব্যথার সাথে সাথে মাথা ঘোরা, শ্রবণ শক্তি কমে যাওয়া ও বমি বমি ভাব দেখা দেয়।
সিজারের পর এ ধরনের ব্যাথা হলে করণীয় হলো:
একজন নারীর স্পাইনাল এনেসথেসিয়ার পর তীব্র মাথা ব্যাথা দেখা দিলে একজন স্পাইনাল এনেসথেসিয়ার বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে সিজার বা অস্ত্রপচার অপারেশনের পর প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। অনেক নারীরা যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে পারেন না।
পর্যাপ্ত পানি পান না করতে পারলে বমি ভাব থাকলে তাদের শিরায় স্যালাইন দিতে হতে পারে। সিজার করার পর বেশি শুয়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে পায়ের শিরায় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে বা আশঙ্কা বেশি থাকে। আরামদায়ক স্থানে ঘুমাতে হবে এবং বিশেষ ধরনের মুজা আছে সেগুলো ব্যবহার করতে হতেপারে। কফি পান করতে পারলে কিছুটা স্বস্তি বোধ পাওয়া যায়।
মাথা ব্যাথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। এ ধরনের ফর্মুলায় চলার পরও যদি তীব্র মাথা ব্যাথা বা কোমর ব্যাথা হয়ে থাকে তাহলে এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিতে হবে।
সিজারের পর ইনফেকশন হলে করণীয়
বাংলাদেশের বর্তমান সময় সিজার বা অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসবের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর সাথে সাথে দেখা দিচ্ছে সিজারের পর ইনফেকশন। ক্রমাগত ভাবে সিজারের পর ইনফেকশন এর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে সিজার বা অস্ত্রোপচার এ ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিতে সমস্যা এবং হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ হওয়ায় এছাড়াও সিজারিয়ান অপারেশনের পর মায়ের অপুষ্টি হল অন্যতম কারণ। বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আত্মীয়-স্বজনরা অবাধ যোগাযোগ করে থাকেন।
বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩ পয়েন্ট ২ মিলিয়ন বাচ্চা ওসব হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এর মধ্যে ৪২ শতাংশ ১.৩ মিলিয়ন এর বেশি জন্ম নেয় সিজার বা অশ্রপচার মাধ্যমে। এরা অনেকাংশই ভুলে থাকেন সংক্রমনে।
এক্ষেত্রে সিজারের পর ইনফেকশন হলে আপনাদের যা করতে হবে তা নিচে দেয়া হল:
* চিকিৎসক ও নার্সদের অবশ্যই উচিত উন্নত মানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য মায়ের অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে আপনি আপনার মেয়েরসিজার কোথায় করাচ্ছেন সে বিষয়ে।
* বাচ্চা প্রসবের পর আত্মীয় স্বজনের সাথে অবাধ যোগাযোগ বন্ধ করতে হবে। কারণ এ সমস্ত লোকজন বাহির থেকে আসে যা জীবাণু থাকতে পারে ফলে নবজাতকের জন্য এবং মায়ের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
*সিজারিয়ান মহিলাদের জামা কাপড় পরিষ্কার রাখতে হবে।
* হাসপাতালের এক সজ্জা থেকে অন্যসজ্জার দূরত্ব খুব একটা বেশি নয় অর্থাৎ এক জায়গায় অনেক লোক থাকার কারণে এ ধরনের সংক্রমণ দেখা দেয়। এক এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে যতটা সম্ভব দূরত্বতা বজায় রাখতে হবে।
*সিজার বা অস্ত্রোপচারএর পর সেলাই করার সময় যদি রক্তের নালীগুলো সঠিকভাবে বন্ধ না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বেঁধে সংক্রমণ হতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকলে ঝুঁকি কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমাদের দেশের নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকাংশই কম। তাই খিচুনি দেখা দেয় এবং পরে দ্রুত সংক্রমণ এর দেখা দেয়।
* হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের বা প্রাইভেট ক্লিনিক এর কর্তৃপক্ষদের একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে সেটি হল ওটিতে নিয়ম অনুসরণ অনুযায়ী প্রতিটি রুগীর জন্য পৃথক সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হতে হবে এতে করে সংক্রমনের হাড় হ্রাস পাবে। অর্থাৎ হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।