এনাল ফিসার থেকে কি ক্যান্সার হয়

প্রিয় পাঠক আপনারা অনেকে এনাল ফিসার রোগ  নিয়ে চিন্তিত থাকেন।এনাল ফিসার  থেকে কি ক্যান্সার হওয়ার সম্ভব? আপনাদের এই কৌতুহলী চিন্তাভাবনা থেকে দূরে রাখতে বেসিক ভাইয়ের ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে আজকের এই প্রতিবেদনটি। আশা করি আমাদের প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণভাবে পড়বেন।  তাহলে এনাল ফিসার  সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জানতে পারবেন। চলুন আর দেরি না করে এবার শুরু করা যাক। 

এনাল ফিসার থেকে কি ক্যান্সার হয়


এনাল ফিসার হল এক ধরনের ঘা পায়ুপথের । যা অল্প কয়দিনের বা দীর্ঘদিনের হতে পারে। পরবর্তীতে এ ধরনের ঘা পেটে অবদি  যেয়ে  থাকে। এর মূল কারণ পায়খানা যদি অনেক শক্ত বা নরম হয়।নিয়মিত মলত্যাগ না হলে বা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে অথবা দীর্ঘক্ষণ ধরে পায়খানা হলে বা মলদ্বারে আঘাত থেকে এনাল ফিসার হয়ে থাকে। এছাড়াও পরিবেশগত কারণে হয়ে থাকে, অনেকের আবার রয়েছে ভুল ধারণা যে বংশগত কারণে এ ধরনের রোগ হয়ে থাকে মূলত এ কথার কোন ভিত্তি নেই।


এনাল ফিসারের অন্যতম কারণগুলো হলো মলদ্বারে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা সৃষ্টি ও চুলকানি এবং ব্লাডি হয়ে থাকলে দীর্ঘদিন ধরে তাহলে এনাল ফিসার  থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। দীর্ঘদিন যাবত এনাল ফিসার থাকলে প্রায়ই চুলকানি ও ব্যথা হয়। মলদ্বারে ব্যাথা হতে পারে যক্ষা থেকে, ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ, ক্রোনস ডিজিজ থেকে।




এনাল  ক্যান্সার ,এনাল ফিসার থেকে তেমন একটা হয় না তবে যে অংশে এনাল ফিসার হয় সেখানে ক্যান্সার হতে পারে।এনাল হিসেবে অপারেশনের পরবর্তীতে যেন কোন ধরনের ইনফেকশন বা পায়খানা ধরে রাখার ক্ষমতা বিঘ্ন না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অন্যদিকে মহিলাদের মলদ্বার যেহেতু ছোট আকৃতির তাই তাদের এ ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।


মলদ্বারে ফিসার বা ব্যথা প্রকটালজিয়া ফ্লুগাক্স, থেকে হতে পারে। পায়খানা বা মল নরম রাখতে কিছু খাবার খেয়ে দেখতে পারেন যেমন: ইসুবগুলের ভুষি, বেলের শরবত, ফল, সবুজ শাকসবজি, এগুলো  খেলে মল নরম রাখা যায়। আরেকটি বিষয় হলো অল্পদিনের এনাল ফিসার হয়ে থাকলে সেজন্য অপারেশন করতে হয় না। সে ক্ষেত্রে জিটিএন বা গ্লিসারিন ট্রাই  নাইট্রেট ক্রিম মলদ্বারে ব্যবহার করে এনাল ফিসারের চিকিৎসা করা হয়।


বাহিরে এনাল ফিসারের চিকিৎসা করা হয় বটুলিনাম টক্সিন ব্যবহার করে। এটি একটি ক্রনিক  বা দীর্ঘদিনের চিকিৎসা। এনাল ফিসার অপারেশনের পর আবার এনাল ফিসের হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। বিশেষ করে অপারেশনের পর যদি পায়খানা শক্ত হয় দীর্ঘদিন ধরে তাহলে আবার এ রোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং অপারেশনও করা লাগতে পারে।

 

এনাল ফিসার রোগের কারণ ও প্রতিকারে কি করবেন


এনাল ফিসার রোগের মূল কারণ হলো কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা মলত্যাগের সময় জোরে চাপ দেওয়ার ফলে মলদ্বার ফেঁটে  যায়। এছাড়াও বিভিন্ন খাদ্যাভাস সমস্যার কারণে বা শরীর কড়া  হয়ে গেলে মল শক্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে তা মল ত্যাগ করার করার সময় মলদ্বার ফেটে যায়।  এর ফলে এনাল ফিসার সৃষ্টি হতে পারে।এ সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে আঁশ যুক্ত খাবার খেতে হবে তাহলে এ ধরনের সমস্যা কম দেখা দেয়।কারণ আঁশযুক্ত খাবারের ভিতরে রয়েছে শাক-সবজি কাঁচা- ফলমূল, আলুর  ছোলা ,ইসুবগুলের ভুষি ইত্যাদি।


এনাল ফিসার থেকে মুক্তি পেতে হলে কিছু করণীয় রয়েছে। সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে কখনো কোষ্ঠকাঠিন্য না হয় এবং বাথরুম বা মল শক্ত হলে বেশি শক্তি প্রয়োগ করে মলত্যাগ করা যাবে না এতে মলদার ফেটে যায়। এজন্য বারে বারে মলত্যাগের অভ্যাস করতে হবে এবং ডায়রিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে। 


এছাড়া এনাল  ফিসার অল্প দিনের জন্য হয়ে থাকলে তা অপারেশন ছাড়া চিকিৎসাতেই সেরে ওঠে।বেশি বেশি আসযুক্ত খাবার খাবেন এবং পাশাপাশি ব্যাথা নাশক ওষুধ খেতে   পারেন। তাছাড়া সিজ বাথ ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহার করার নিয়ম হলো একটি গামলায় অর্ধেক গরম পানি নিয়ে লবণ মিশিয়ে সেই পানির মধ্যে নিতম্ব দশ মিনিট ডুবিয়ে রাখবেন।এতেও যদি সম্পূর্ণভাবে রোগটি না সের ওঠে তাহলে দীর্ঘদিন হয়ে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


  

এনাল ফিসারের ঘরোয়া চিকিৎসা


এনাল ফিসারের ঘরোয়া চিকিৎসা বলতে মূলত প্রাথমিক পর্যায়ে এনাল ফিশারের চিকিৎসা ওষুধের মাধ্যমে করা হয়। কিছু স্থানিক মলম রয়েছে, মল নরম করার ওষুধ রয়েছে যার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয় ঘরে বসেই। এনাল ফিসার দীর্ঘদিন হয়ে গেলে এটি ক্রনিক  পর্যায়ে চলে যায়।তখন আপনি যতই ওষুধ সেবন করুন না কেন কোন কাজে আসবে না। কারণ এই সময়ের ভিতরে পায়ুপথ সংকুচিত হয়ে যায়। পরবর্তীতে অপারেশন ব্যতীত কোন বিকল্প থাকে না।

  


এনাল ফিসার হোমিও চিকিৎসা


আমরা সাধারনত বুঝে থাকি পায়ুপথের যেকোনো রোগ হলেই তা পাইলস মনে করি থাকি। কিন্তু পাইলস  ছাড়াও পায়ুপথে অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে যেমন তার মধ্যে একটি হলো এনাল ফিসার।  কোষ্ঠকাঠিন্য বা মল ত্যাগ করার সময় বেশি শক্তি প্রয়োগ করার ফলে পায়ুপথ ফেটে যায়। এ ধরনের রোগ  বেশিরভাগ আক্রান্ত থাকে মহিলারা। তাই তারা সংকোচ বোধ করে এ ধরনের চিকিৎসা করতে।



পরবর্তীতে তারা আরো জটিল সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই তারা বিভিন্ন কবিরাজ, গাছ-গাছরা অনভিজ্ঞ লোক দ্বারা  অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। এনাল ফিসার  নিরাময়ে হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার মোঃ মাহাতাব হোসাইন মাজেদ।  রোগীকে চিকিৎসা করা হয় রোগকে নয়। হোমিও চিকিৎসককে রোগীর বর্তমান অবস্থা, কষ্ট মানসিক, দৈহিক ও চরিত্রগত লক্ষণগুলো মূল্যায়ন করা হয়।



এনাল ফিসারের জন্য 50টিরও বেশি হোমিওপ্যাথিক ব্যবহার করা হয়। সবকিছু বিবেচনা করে একটি শক্তিক ওষুধ তৈরি করে পরিবর্তিত মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে। এই পদ্ধতিতে যদি ওষুধ নির্বাচন করা সঠিক হয়।  সেক্ষেত্রে এলোপতির সকল সার্জিক্যাল রোগ বা কোন জটিল রোগ অল্প সময়ের মধ্যে হোমিওপ্যাথিতে আল্লাহর রহমতে স্থায়ীভাবে দূর করা সম্ভব।


শেষ কথা

প্রিয় পাঠক অন্যান্য সব ধরনের তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটি ভিজিট করুন এবং নিচে গিয়ে কমেন্ট করুন ধন্যবাদ।  

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url