ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

প্রিয় পাঠকগণ আপনারা অনেকেই ইন্ডিয়ান পোস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজন কাগজপত্র সম্পর্কে জানতে চান। তবে অনেকেই জানেন না কিভাবে ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করবেন আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য। বিস্তারিত ভাবে বুঝতে আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন আর দেরি না করে এবার শুরু করা যাক।


ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র


গন্তব্য যেহেতু ইন্ডিয়া সেক্ষেত্রে ভ্রমণপ্রসূদের জন্য দ্বিতীয়বার  চিন্তার করার কোন কারণ নেই। পৃথিবীতে যতগুলো বৃহত্তম দেশ আছে তার মধ্যে ইন্ডিয়ার অবস্থান সপ্তম। এ দেশটির প্রাকৃতিক নিদর্শনের সবটুকু যেন বক্ষে ধারণ করে রয়েছে। করোনা মহামারীর  পর পরের বছরই পর্যটনখাতের ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েছে তাজমহলের এই দেশ ইন্ডিয়া। বিশ্বে যতগুলো পরিদর্শনকারী দেশ রয়েছে তার মধ্যে ভারতের অবস্থান 25 তম। তাই ভারতের টুরিস্ট ভিসা অনেক ভ্রমণকারীদের প্রতি আকাঙ্ক্ষিত বস্তু। 


বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ হলো ইন্ডিয়া২০২১ সালে ঘোষণা করা হয়। সে সময় পর্যটন খাতের অবদান ছিল 5.8% . গত এক বছরে আবারো সর্ব হয়ে উঠেছে ইন্ডিয়ার হাজারও ঐতিহাসিক স্থাপনার দেশটি। আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার লাভের জন্য সামগ্রিক প্রয়োজনীয় দিক সম্বন্ধে বলা হয়েছে।  


ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আবেদন করার নিয়ম:


* ভিসার আবেদন পত্রের সাথে সাদাকালো অথবা রঙিন প্রিন্ট কপি। 


*পাসপোর্ট এর ফটোকপি সর্বনিম্ন ৬ মাস মেয়াদের। সাথে মূল কপি নিতে হবে।পুরনো পাসপোর্ট থাকলে সেটাও লাগবে কারণ পুরনো পাসপোর্ট এর নাম্বার নতুন পাসপোর্টে থাকে না। তাই এসব ঝামেলা থেকে এড়াতে থানায় জিডি বা জেনারেল ডায়েরি করে তার কপি জমা দিতে হয়। এটা না করলে বিষের আবেদন জমা নেওয়া হয় না।


*দুই কপি ছবি লাগবে ইঞ্চি পরিমাপে 2/2 সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের। ছবির সাধারণত সাইজ হতে হবে পাসপোর্ট সাইজের থেকে কিছুটা ভিন্ন সাইজের।এ ক্ষেত্রে চিন্তার কোন কারণ নেই।  স্টুডিওতে ভারতীয় ভিসা সাইজ বললে তারা তা বুঝে আপনাকে সেরকমেরই ছবি প্রস্তুত করে দিবে। 


*একটি বিশেষ বিষয় খেয়াল রাখতে হবে তা হলো অনলাইনে নিবন্ধনকৃত জন্ম সনদ বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড যেটি দিয়ে পাসপোর্ট করা হয়েছিল সেটার ফটোকপি দিতে হবে। অন্যথায় এর কোন ব্যতিক্রম ঘটলে বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 


*ঠিকানা প্রমাণপত্রের ক্ষেত্রে বর্তমান ঠিকানার  সর্বোচ্চ তিন মাস পুরনো গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ,টেলিফোন বিল, এর ফটোকপি লাগবে। প্রিপেইড মিটার বা গ্রাহকগণ মিটার কার্ডের উভয় পাশের ফটোকপি দিয়ে কাজ চালাতে পারবেন। 


*শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি, চাকরিজীবী হয়ে থাকলে এনওসি লাগবে।এক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে পাসপোর্টে যদি স্টুডেন্ট হিসেবে করা হয়ে থাকে  সেক্ষেত্রে আইডি কার্ড জমা দিতে হবে। অন্যথায় প্রাইভেট সার্ভিস হিসেবে করা হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে এনওসি দেওয়াই ভালো। ভিজিটিং কার্ড থাকলে সেটিও সংযুক্তি হিসেবে দেওয়া যেতে পারে। এটি ভাবতে পারেন অতিরিক্ত নতি বরং এটি ভিসা প্রাপ্তির সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।


*কমপক্ষে দেড়শ ডলারের এনডোর্সমেন্ট  দিতে হবে। ব্যাংক থেকে এই এন্ডোসমেন্ট করতে হবে।পরবর্তীতে এই কপিটির  ফটোকপি দিতে হবে। প্রার্থীর নিজের বাবার ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও জমা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে তার একাউন্টে বিগত ৬ মাস ধরে 20000 টাকা থাকতে হবে। 


* ভিসা ফী  ৮০০ টাকা দেয়ার রশিদের ফটোকপি।


 


অনলাইনে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন


অনলাইনে ইন্ডিয়ান রুশ ভিসা আবেদনের জন্য প্রথমত আপনাদের যেতে হবে ভারতের সরকারের ইন্ডিয়ান ভিসা অনলাইন সাইট এ। তারপর এখানে অনলাইন ভিসা অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করতে হবে।প্রতিটি ঘর পাসপোর্ট অনুযায়ী নির্ভুলতার সাথে পূরণ করতে হবে। অধিকাংশ ভিসার আবেদন প্রত্যাখানের হওয়ার মূল কারণ হলো প্রতিটি ঘর পাসপোর্টে ভুলভাল তথ্য পূরণ করা দায়ী। 


আবেদনপত্র পূরণ করার সময় অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পূর্ব থেকে প্রস্তুত করে রাখতে হবে।

 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো হল সর্বনিম্ন 6 মাস মেহেদী পাসপোর্ট, প্রার্থীর ভারতীয় ভিসা সাইজের ছবি সহ সফট বা স্ক্যান  কপি। ভারতে গিয়ে যে হোটেলে উঠবেন তার ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার। 


হাতে অনেকটা সময় নিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। কারণ সঠিক ভাবে আবেদনপত্র পূরণ করতে প্রায় এক ঘন্টা সময় লাগতে পারে। 


আবেদন ফরমের  ইন্টার্ফেসটি আসার পর প্রার্থীর পুরো নাম, মা -বাবার নাম, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, শিক্ষা, অফিস, প্রতিষ্ঠানের তথ্যাবলী সব নির্ভুলভাবে দিতে হবে। তারপর ইন্ডিয়ায় কোন পোর্টদিয়ে যাওয়া হবে সেটা নির্বাচন করতে হবে। যদি বেনাপোল দিয়ে যেতে চান তাহলে নির্বাচন করতে হবে হরিদাসপুর পোর্ট। আর যদি তামাবিল দিয়ে বের হন তাহলে বাছাই করতে হবে ডাউকি।যদি বুড়িমারী  রোড ব্যবহার করা হয় তাহলে চ্যাংড়া বান্দাতে টিক দিতে হবে। আর দর্শনা পোর্টটি  রেলপথের যাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য।


অনলাইনে আবেদন করার পর রেফারেন্স দিতে হয় সেক্ষেত্রে এমন কারো নাম ও ফোন নাম্বার উল্লেখ করতে হবে যার আবেদনকারীর সাথে ইন্ডিয়ায় যাওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। এর ফলে ইন্ডিয়া গিয়ে কোন সমস্যা পড়লে  বাংলাদেশে আবেদনকারী বা প্রার্থীর বাসায় যোগাযোগের নিশ্চয়তা থাকবে। আর ভারতের রেফারেন্স হিসাবে তো থাকবেই হোটেলের নাম ঠিকানা ও ফোন নম্বর।  ভারতের হোটেলটি কোন এলাকায় সেটি উল্লেখ করতে হয় একদম শেষ পর্যায়ে।


এরপর প্রার্থীর আবেদন পত্রটি সফলভাবে সাবমিট হয়ে গেলে তা প্রিন্ট করে নিতে হবে। মোট দুই স্থানে স্বাক্ষর করতে হয় আবেদনপত্রের। একটি হলো ছবির নিচে, আরেকটি হলো একেবারে শেষ পৃষ্ঠায়।এক্ষেত্রে একটি বিষয় বাঞ্ছনীয় আপনি যে  স্বাক্ষর টি করছেন সেটি যেন পাসপোর্ট এর দেওয়া আবেদনকারীর স্বাক্ষরের সাথে মিল থাকে। প্রিন্টকৃত আবেদনপত্রের একটি দুই বাই দুই ইঞ্চি ছবি আঠা দিয়ে লাগাতে হবে।



ভিসা প্রসেসিং ফী  কিভাবে জমা দিবেন


পূর্বে ভিসা ফি জমা দেয়া লাগতো আইভ্যাকে (ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে) তবে বর্তমানে সেটি এখন অনলাইনে দেয়া যায়। ভিসা ফি হল ৮০০ টাকা তার সাথে ব্যাংক বা বিকাশের চার্জ দিতে হয়। আর যদি অফলাইনে ভিসা ফি দিতে চান তাহলে যে কোন আইভ্যাকে বা তার আশেপাশে এই জমা দেওয়া যায়।



ইন্ডিয়া টুরিস্ট ভিসা আবেদন কোথায় জমা দিতে হয়


উপরের কার্যাবলী শেষ করার পর এবার আবেদন পত্রটি সাথে সকল প্রয়োজন কাগজপত্র নিয়ে ভারতে ভিসা সেন্টারে চলে যেতে হবে ইন্ডিয়ান ভিসা সেন্টারে অনেকটাই ভিড় থাকে এটা নতুন কিছুই নয়। তাই আপনি যদি তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে চান তাহলে সকাল-সকাল আপনাকে যেতে হবে।আবেদনকারীর বা প্রার্থীর বর্তমান ঠিকানা যে বিভাগে তাকে সেই বিভাগের ভারতীয় আবেদন সেন্টারে ভিসা আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। 


পূর্বে এক সময় ভিসাআবেদনের জন্য ই -টোকেন লাগতো।  এখন ভিসা আবেদনের জন্য দেশের কোথাও আর ই-টোকেন দরকার হয় না। যেকোনো দিন সকাল আটটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত এর ভিতর জমা দেওয়া যায়। একমাত্র সরকারের ছুটির দিন ব্যতীত অন্যত্র সময়। বাংলাদেশের ইন্ডিয়ান সেন্টার গুলো হল ঢাকা যমুনা ফিউচার পার্ক, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, ও রংপুর।


ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা পেতে কত দিন সময় লাগে


রাজধানীর ভিতর ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা পেতে তিন থেকে সাত দিনের মত সময় লাগে। এক্ষেত্রে ঢাকার বাইরে কম সময় লাগে দুই থেকে তিন দিন। এই সময়ের ভিতর ভিসা হাতে পাওয়া যায়। ভিসা আবেদনের পর ইন্ডিয়ান ভিসা অনলাইন ওয়েবসাইট থেকেই ভিসা আবেদনের সর্বশেষ আপডেট জানা যায়। ভারতীয় এম্বাসিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়ার পর একটা টোকেন দেয়া হয়।


পরবর্তীতে পাসপোর্ট ভিসা সংগ্রহ করতে এই টোকেনটি দেখাতে হয়। ভিসা গ্রহণ করার জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই সশরীরে উপস্থিত হতে হবে। যদি কোন সমস্যার কারণে আবেদনকারী বাপ্রার্থী তিনি না যেতে পারেন তবে তার পক্ষ থেকে অন্য কেউ  যেতে পারে। তবে, তার হাতে আবেদনকারী স্বাক্ষর দেয়া একটি মনোনয়নপত্র দিতে হবে, সাথে উল্লেখ করতে হবে আবেদনকারীর উপস্থিত হতে না পারার কারণসমূহ।

    

ইন্ডিয়া মেডিকেল ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ইন্ডিয়া মেডিকেল ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো হল:

* সর্বনিম্ন ৬ মাসের বৈধতা ও দুই ফাঁকা পৃষ্ঠাগুলোর সাথে পাসপোর্ট। 

* সাম্প্রতিক সময়ের পাসপোর্ট আকারের ফটোগ্রাফ। 

* পাসপোর্ট এর ফটোকপি। 

* আবাসিক ঠিকানা প্রমাণপত্র। 

* ভিসা আবেদন ফরমের প্রিন্ট আউট। 

* বাংলাদেশের চিকিৎসকের একটি নথিপত্র। বা নির্দিষ্ট চিকিৎসা কেন্দ্র সুপারিশ। 

* পরিচালকের পাসপোর্ট কপি মেডিকেল  ভিসার জন্য। 

* প্রমাণপত্র পরিচালক এর সঙ্গে সম্পর্কের। 

* মেডিকেল রিপোর্ট ডাক্তার থেকে। এছাড়া ইন্ডিয়া মেডিকেল ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ অন্যান্য তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন


শেষ কথা

উপরিউক্ত  তথ্যাবলী থেকে আপনারা ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।  এছাড়াও অন্যান্য সব ভিসা সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েব সাইটে ভিজিট করুন এবং ওয়েবসাইটের নিচে গিয়ে কমেন্ট করুন ধন্যবাদ। 

Next Post Previous Post
2 Comments
  • Al Hendawy
    Al Hendawy September 15, 2023 at 1:46 AM

    The way you explain a complex topic in an easy-to-understand way is really impressive. https://www.alhendawymc.com/ar/%d8%b7%d8%a8%d8%a7%d9%84%d8%a3%d8%b7%d9%81%d8%a7%d9%84/

  • Healthy Folks
    Healthy Folks September 21, 2023 at 10:42 PM

    Healthy Folks Medical Center, dental clinic Abu Dhabi focuses on giving the best dental care. We have specialised doctors for different dental services who are experts in their field of work.

Add Comment
comment url