ইস্পাহানি চক্ষু হাসপাতাল
ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল চোখের যাবতীয় সমস্যার বিশেষ সেবা কেন্দ্র হিসেবে বেশ পরিচিত। যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এ হাসপাতাল চোখের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে অভিহিত। বাংলাদেশের যতগুলো চক্ষু হাসপাতাল রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম চক্ষু হাসপাতাল হল ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল। প্রিয় পাঠক আপনারা অনেকেই ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে চান। তবে আপনারা জানেন না কিভাবে হাসপাতালে চিকিৎসা করাবেন। আজকের প্রতিবেদনটি আপনাদের জন্যই। চলুন আর দেরি না করে এবার শুরু করা যাক।
ইস্পাহানি চক্ষু হাসপাতাল
সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বর্তমানে চোখের সেবায় বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বা সেবা কেন্দ্র হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ পেয়েছে।ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালটির অবস্থান ঢাকার ফার্মগেটে। এখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ধারা আধুনিক চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চোখের সমস্যা জনিত রোগীরা এখানে চিকিৎসা করাতে আসে। প্রতিষ্ঠানটি চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি শিক্ষা ইনস্টিটিউট হিসেবে বেশ মর্যাদা লাভ করেছে।
ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল পরিচিতি
এই হাসপাতালের স্থাপত্য শুরু হয় ১৯৬০ সালে। অন্ধত্ব দূর করার পাশাপাশি চোখের প্রায় সব ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয় এই প্রতিষ্ঠানটি মাধ্যমে। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। অর্থ সামাজিক কল্যাণ, আর্ত মানবতার কল্যাণের জন্য সমাজসেবীদের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় হাসপাতালটি। ইস্পাহানি গ্রুপের কর্ণধর প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন।
হাসপাতালটির অবকাঠামো ও রোগী দেখার সময়
ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ২০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। কেবিনরুম রয়েছে ১১ টি, চিকিৎসক নিয়োজিত আছেন ৮০ জনের অধিক। স্টাডি ইস্পাহানি চক্ষু হাসপাতালের রোগী দেখার সময় হল প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে দুপুর 2 টা পর্যন্ত। বহির্বিভাগ এবং হাসপাতালের কার্যক্রম চলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। সরকারের ছুটির দিন ব্যতীত হাসপাতালটি বাকি সব দিন চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে।
নিতান্ত গরিব ও অসহায় রোগীদের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে সমাজসেবা বিভাগ। সমাজসেবা বিভাগটি এ ধরনের রোগীদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করতে থাকে। অসহায় রোগীরা চিকিৎসা সেবা পেতে আবেদন করে থাকে।
তখন সত্যতা যাচাই করে এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অনুসারে তাদেরকে চশমা, নগদ টাকা, খাদ্য, বস্ত্র, যাতায়াত খরচ, অপারেশন খরচ দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউ ট হাসপাতালটি শিক্ষা ইনস্টিটিউট হিসেবে বেশ ভূমিকা রাখছে। এখানে দেশের বাহির থেকেও পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণের জন্য এসে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
চিকিৎসা সেবা ও খরচ
এখানে সাধারণ ওপিডি বিভাগ রয়েছে সাধারণ ও নিম্ন বিত্ত শ্রেণিদের জন্য। আর যারা দ্রুত সেবা গ্রহণ করতে চান তাদের জন্য রয়েছে প্রাইভেট ওপিডি। সাধারন ওপিডিতে সেবা পেতে হলে ৫০ টাকা করে টিকিট ক্রয় করতে হয়। আর আপনি যদি প্রাইভেট ওপিডিতে সেবা গ্রহণ করতে চান তাহলে টিকিটের মূল্য হবে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। তবে সেবার মানের কোন বৈষম্য নেই। একথা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুজ্জামান।
ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে চোখের সব ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য বিশেষ ধরনের প্যাকেজের ব্যবস্থা করে রেখেছে। সর্বনিম্ন ১৫০০০ থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত সেবা দিয়ে থাকে। এখানে যেসব ধরনের চিকিৎসা সেবা রয়েছে তা হল: চোখের সানি অপারেশন,ডেসিয়ার অপারেশন, কর্নিয়া অপারেশন ,রেটিনা অপারেশন ,টমা অপারেশন, নেত্রনালী অপারেশন। তাছাড়াও রয়েছে চোখের যাবতীয় রোগের টেস্ট করার বিশেষ সুবিধা। যেমন:সেক, হামপ্রে, সিইপি, এফএফএ, ইসিজি, সিসিটি, ব্লাড, ওসিটি ও ইউরিনসহ অন্যান্য।
ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে মোট ১৫টি বিভাগ রয়েছে। প্রচলিত পনের বিভাগ দ্বারা তেরোটিরও বেশি চোখের রোগের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়। হাসপাতালটিতে বিশেষত কয়েকটি চিকিৎসা শাখা আছে,গ্লুকোমা, রেটিনা, কর্নিয়া, ক্যাটার্যাক্ট, লোভিশন, ইনজুরি, শিশু চক্ষুরোগ ইত্যাদি। বিশেষ করে চোখের কর্নিয়া, রেটিনা অপারেশনে হাসপাতালটি ইতোমধ্যে বেশ জায়গা করে নিয়েছে রোগীদের মাঝে।
এ হাসপাতালে খরচ হয়ে থাকে ওয়ার্ড কিংবা কেবিনে ভাড়া অনুযায়ী। এখানে ন্যূনতম কেবিন ভাড়া ১৭৫০ টাকা। আর যদি ভিআইপি কেবিন ভাড়া নিতে চান তাহলে সর্বোচ্চ ভাড়া পড়বে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। বহির্বি বিভাগ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৫০০ রুগী সেবা গ্রহণ করছে। এ হাসপাতালে জটিল ধরনের অপারেশন করা হয়। সেক্ষেত্রে রোগের ধরন অনুযায়ী খরচ বিবেচনা করা হয়।ডায়াবেটিস রোগীদের রেটিনার ডেটাচমেন্ট সার্জারির মাধ্যমে চোখের ভিতর ইনজেকশন দেয়া হয়। এর চিকিৎসা সেবায় খরচ বলতে হয় ৮ হাজার থেকে দশ হাজার টাকা। রেটিনার চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ খরচ হয়৩৫ হাজার টাকা।
শেষ কথা
উপযুক্ত আলোচনা থেকে আমরা আপনাদেরকে স্থানে চক্ষু হাসপাতাল সম্পর্কে বিশেষ কিছু ধারণা দিতে পেরেছি। এছাড়াও অন্যান্য সব তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন অথবা নিচে গিয়ে কমেন্ট করুন ধন্যবাদ।