মাথার ত্বকে চর্মরোগ ঔষধ

প্রিয় ভিউয়ার্স আজকে মাথার ত্বকের চর্ম রোগের ওষুধ সম্পর্কে।  এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আলোচনা করা হবে। আমাদের কম বেশি সবারই মাথার ত্বকের কোন না কোন সমস্যা থেকেই থাকে। তাই আর দেরি না করে চলুন এবার শুরু করা যাক।  মাথার চর্ম রোগের সমস্যাগুলো ও ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিন। 


মাথার ত্বকে চর্মরোগ ঔষধ

মাথার ত্বক এক বিশেষ ধরনের ত্বক। এতে রয়েছে হেয়ার ফলিকল শ্বেতগ্রন্থিসহ নানা ধরনের বাড়তি উপাদান। এর পাশাপাশি একই ত্বকে রয়েছে কিছু বিশেষ ধরনের সমস্যাও। নিচে আলোচনা করা হলো মাথার ত্বকের সমস্যাগুলো:


প্রথমত খুশকি:

মাথার ত্বকের যতগুলো সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে খুশকি বা  ড্যানড্রাফ অন্যতম সমস্যা। ড্যানড্রাফ সমস্যা মাথার ত্বকের মৃত কোষ গুলোকে সাদা সাদাগুঁড়ো  অথবা অনেক সময় টুকরার মত উঠে আসে। এর সাথে ছত্রাকের সংক্রমণও থাকতে পারে। এ দিয়ে হয় চুলকানি অথবা ত্বক লাল হয়ে যায়। এমত অবস্থায় চর্ম চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তাছাড়াও  কিটোকোনাজল শ্যাম্পু ও অন্যান্য চিকিৎসা নিলে এর সমস্যা থেকে ভালো থাকা যায়।



সেবোরিক ডার্মাটাইটিস:

খুশকি বা ড্যানড্রাফ অনেক সময় তীব্র আকার ধারণ করে থাকলে মাথার ত্বক লাল ক্ষতর মত হয়ে যায়। একে বলা হয় সেবোরিক ডার্মাটাইটিস। মাথার ত্বক ছাড়াও ভ্রূ ও মুখের ত্বকে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা থেকে তৈলাক্ত ত্বক বা ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।


রিং ওয়ার্ম:

বাচ্চাদের মাথার ত্বক ছত্রাকের সংক্রমণ হয়ে কিছু কিছু জায়গায় মাথার চুল সোপ আকারে  উঠে যায়।স্থানগুলো দেখতে লাল রাশের মতন হয়। এটিও একটি সংক্রমণ। এটি একটি ছোঁয়াচে রোগের মত।আক্রান্ত ব্যক্তির কোন কিছু ব্যবহার করলে অন্য ব্যক্তিরা আক্রান্ত হতে পারে।

যেমন: আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত তোয়ালে, টুপি, এক জামাকাপড়, ইত্যাদি ব্যবহার করলে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা শিশু অনেক পোষা প্রাণী থেকেও সংক্রমণিত হয়। এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ছত্রাকৃতি মলম রয়েছে ও মুখে খাবার ওষুধ রয়েছে সেগুলো লাগালে সেরে উঠবে।
 

ফলিকুলাইটিস:

ফলিকুলাইটিস হল ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে চুলের গোড়া বা হেয়ার ফলিকলের সমস্যা দেখা দিলে তাকে ফলিকুলাইটিস বলে। এটি এমন একটি রোগ মাথার ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় পুঁজভর্তি ছোট ছোট দানা আকৃতির হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সমস্যা হয়ে থাকে  শেভ বা ওয়াক্স ব্যবহার করা থেকে। এক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক চিকিৎসা করার প্রয়োজন হয়। 


 সোরিয়াসিস:

শরীরের অন্যান্য স্থানের মত মাথার ত্বকেও  সোরিয়াসিস সংক্রমণ আক্রান্ত করতে পারে। চিকিৎসকরা বলে থাকেন এটি একটি জটিল ও মাল্টি সিস্টেম রোগ। সোরিয়াসিস থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


 

উকুন:

মাথার ত্বকে উপর উকুনএকটি পরিচিত সমস্যা। বিশেষ করে এ রোগে ভুগে থাকেন শিশুরাই বেশি। এটি বড় ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার ভিতর না পড়লেও তবে বিরক্তিকর বা অস্বস্তিকরবা  বিব্রতকর অনুভূতি।উকুন নিধারণ করার কিছু ক্রিম বা শ্যাম্পু রয়েছে পারমিথ্রিন ক্রিম বা শ্যাম্পু, আইভারমেকটিন ইত্যাদি। 



মাথার ত্বকে ঘা দূর করার উপায়

প্রতিবছর প্রত্যেক ঋতু বদলানোর সময় মাথার ত্বকে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ঋতু পরিবর্তনের সময় মাথার ত্বকের যে সমস্ত সমস্যাগুলি অস্বস্তিকর করে তোলে সেগুলোর জন্য কয়েকটি ঘরোয়া সমাধান ট্রাই করে দেখতে পারেন। 


টি ট্রি অয়েল:

টিট্রিওয়েলে রয়েছে এন্টিফাঙ্গাল, এন্টি মাইক্রোবায়াল, অ্যান্টিসেপটিক। কিন্তু সরাসরি টি ট্রি অয়েল মাথার ত্বকে লাগাবেন না।হেয়ার  মাক্স  এর সাথে ১০ থেকে ১২ ফোটা টি ট্রি  ওয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে বা শ্যাম্পুর মধ্যেও মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। এ পদ্ধতিতে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন। 


 অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার:


অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটারি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল রয়েছে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারে।যাদের ত্বকের শুষ্কতার কারণেই মাথা চুলকানো হয়ে থাকে। তাহলে আপনারা অ্যাপেল সাইডে ভিনেগার আর পানির মিশ্রণ দিয়ে নিয়মিত মাথা ওয়াশ করতে পারেন এতে উপকার পাবেন।


সপ্তাহে দুই দিন শ্যাম্পু ব্যবহার করার পর এক কাপ পানিতে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিক্স করে মাথার তালুতে ভালো করে লাগিয়ে নিবেন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুলগুলো ভালোভাবে ধুয়ে ফেলবেন। এছাড়াও নারকেল বা অলিভ অয়েল, এলোভেরা জেল, লেবুর রস এগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে ঘরোয়া উপায়ে মাথার ত্বকের ঘা দূর করা সম্ভব।


মাথায় চর্মরোগের চিকিৎসা


সেবোরিক ডারমাটাইটিসের মাধ্যমে মাথার ত্বক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।সেবোরিক ডার্মাটাইটিস সংক্রমনের আক্রান্ত স্থানে লাল হয়ে যায় এবং খসখস হয়ে যায় ও খুশকি দেখা দেয়। এছাড়াও এ রোগের কারণে মুখমণ্ডল ও বুকের উপরের অংশ এবং পিঠের মত শরীরের তৈলাক্ত অংশ আক্রান্ত হয়ে থাকে। রোগের কারণে অস্বস্তিকর বোধ হয়।

 

মাথার চর্ম রোগের চিকিৎসার জন্য চর্ম বিশেষজ্ঞের চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। তাছাড়াও আপনি চাইলে কিছু শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।  পাইরিথিয়ন জিঙ্ক ও সেলেনিয়ামযুক্ত শ্যাম্পু (প্রতিদিন), অ্যান্টিফাংগাল কিটোকোনাজলযুক্ত শ্যাম্পু (সপ্তাহে দুইবার), সেলিসাইলিক এসিড শ্যাম্পু (প্রতিদিন) . . . এ ধরনের শ্যাম্পু মাথার পাখি ব্যবহার পাশাপাশি মুখমণ্ডলও বুকে ব্যবহার করতে পারেন।


ঘরোয়াভাবে মাথায় চর্ম রোগের চিকিৎসা করতে পারেন


অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন আক্রান্ত স্থানে। ১ থেকে দেড় ঘন্টার মত আক্রান্ত স্থানটিতে তৈলাক্ত অবস্থায় থাকতে দিন। পরে চিরুনি বা ব্রাজিলের চুলগুলো আঁচড়িয়ে নিন অবশেষে ধুয়ে ফেলুন। চর্মরোগ থেকে বাঁচার প্রথমত পন্থা হলো সব সময় নিজেকে উপায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।


নিয়মিত ত্বকের পরিষ্কার করতে হবে ও যত্ন নিতে হবে। নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার করার জন্য সাবান ব্যবহার করতে পারেন। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত  ক্ষারযুক্ত যুক্তসাবান ব্যবহার করবেন না। প্রয়োজনার্থে আপনি  ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।


 উপসংহার:

প্রায় মানুষই মাথার ত্বকের চর্ম রোগে ভুগে থাকেন।  তাই এটিকে অবহেলা করবেননা এতে বড় ধরনের রোগ হতে পারে। এজন্য আমরা তাৎক্ষণিক চর্ম বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের কাছে স্বরপন্ন হবো। সিজনাল পরিবর্তনের সময় চর্ম রোগের সমস্যা বেশি দেখা যায়। সব সময় নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন যত্ন রাখবেন। ধন্যবাদ। 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url