ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ
প্রিয় পাঠক আজকে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ সম্পর্কে আলোচনা করব চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ
সিজন পরিবর্তন হওয়ার সময় বা শীতকালে গলা ব্যাথা সমস্যা বেশিরভাগ দেখা দিয়ে থাকে সকলের মাঝে। এছাড়াও অনেকের রয়েছে টনসিলের সমস্যা। এ ধরনের ব্যক্তিদের হালকা একটু ঠান্ডা গরম হলেই গলা ব্যথার সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এর সংক্রমণ দিনার দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাথে রয়েছে করোনার সংক্রমণ। অনেকের আবার গলা ব্যথার সাথেজ্বরের সমস্যা থাকে। কারো কারো জন্য জ্বর না থাকলেও ফুসফুসে কাশি ভাব দেখা যায়।
বর্তমানে ঠান্ডা গরম হওয়ার কারণে বা সকালে তীব্র গরম রাত্রে ঠান্ডা লাগে। অনেকে আবার রাতে ঘুমানোর সময় ফ্যান চালিয়ে ঘুমায় পরবর্তীতে ভোর রাতে যখন একটু ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব দেখা যায় তখন ফ্যানের বাতাসে বুকে বা মাথায় আরো বেশি ঠান্ডা লেগে যায়। এর ফলে দেখা দেয় জ্বর সর্দি কাশি, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা।
গরমে অতিরিক্ত গরমে ঘাম বসে গিয়েও গলা ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। বর্তমান সময়ে আতঙ্কিত নাম করোনাভাইরাস। অনেকেই গলা ব্যথাহলেই ভেবে থাকেন যে করোনা হয়েছে। আসলে গলা ব্যথা মানেই করোনা ভাইরাস এরকম নয়। এটি একটি ভুল ধারণা।
গলা ব্যাথা হলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে সাহায্য নিবেন নিম্নের এ বিষয়ে বলা হলো:
*ঢোক গিলতে সমস্যা হলে অথবা গলা ব্যাথা হলে গরম পানির সাথে নুন মিশিয়ে গড়গড়া করতে পারেন। গলা ব্যথার সমস্যার কারণে নুন পানি দিয়ে গড়গড়া করায় প্রাথমিক ওষুধ হিসেবে খুবই কার্যকর। বেশি সমস্যা হয়ে থাকলে দিনে তিন থেকে পাঁচবার গড়গড়া করতে পারেন। এতে করে আপনার ব্যথা বা সংক্রমণ অনেকটাই কমে যাবে।
এছাড়াও আপনি চাইলে আদা ব্যবহার করতে পারেন আদা ও বেশ কার্যকর। আদার ভিতর রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা খুব তাড়াতাড়ি সংক্রমণ রোধ করতে পারে। তাই গরম পানিতে কয়েক টুকরো আদা দিয়ে ফেলুন। এরপর পানিতে মিশ্রিত পানি দিয়ে ভালোভাবে গড়গড়া করুন। এছাড়াও আধা পানিতে মধু দিয়ে খেতে পারেন।এতে অনেকটাই উপকার পাবেন।
*লেবু দিয়েও গলা ব্যথা দূর করা যায়। চিকিৎসকরা বলে থাকেন যে লেবু মানব শরীরের টক্সিন দূর করার ক্ষেত্রে বেশ উপকারী। তাই গলা ব্যথা হলে এক গ্লাস গরম পানির সাথে লেবুর রস ও এক চা চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে খেতে পারেন। প্রতিদিন দুইবার খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। সর্বোপরি গলা ব্যথা বা টনসিলের সমস্যা দূর করার জন্য লেবু ও মধু ,পানি কার্যকর।
*হলুদ দিয়ে গলা ব্যথা দূর করা যায়। কারণ হলুদে আছে অ্যান্টিসেপটিক। এছাড়াও হলুদের ভিতরে থাকে এন্টি ইনফ্লামেটরি গুণাগুণ। যা গলা ব্যথায় ভালো কাজ করে। হলুদের মধ্যে রয়েছে অনেক গুনাগুন। দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেলে খুব ভালো উপশম হয়। প্রতিদিন ভোরবেলা একদম খালি পেটে এক টুকরো পরিমাণ হলুদ খাওয়া খুবই ভালো।
*এক চা চামচ মধু ও কয়েক ফোঁটা তেলের সাথে দারুচিনি মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন অন্ততপক্ষে একবার এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। গলা ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি পাবেন। এছাড়াও যেকোন ব্যথার জন্যই কার্যকর।
*গলা ব্যথার নিরাময়ের কাজে ব্যবহৃত হয় মধু প্রাচীনকাল থেকেই। মধুতে রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টি ইনফ্লামেটরি। এক কাপ গরম পানিতে ১ও ২ চামচ মধু মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিন বার বা ঘুমোতে যাওয়ার পূর্বে আপনি এক চা চামচ মধু খেতে পারেন। গলা ব্যথার পাশাপাশি শ্বাসকষ্টের জন্য বেশ কার্যকরী।
*ভাপ দিয়েও গলা ব্যথা দূর করার একটি অন্যতম পদ্ধতি। এটি খুব জোরদার ভাবে কাজ করে থাকে গলা ব্যথা নিরাময়ের জন্য। প্রথমত কার মাথা ভালো করে পেঁচিয়ে নিন কাপড় দিয়ে। এখন গরম পানির সাথে সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে পানির ভাব নিবেন। এই পদ্ধতি দিনে দুইবার করবেন। এর ফলে খুব সহজেই গলা ব্যাথা কমবে।
*আরও একটি ঘরোয়া টোটকা রয়েছে গলা ব্যথা নিরাময়ের জন্য। রসুন খুব ভালো রোগ প্রতিরো ধ গড়ে তোলে ও গলা ব্যথার পাশাপাশি ইনফেকশন হলে কমাতে সাহায্য করে। রসুনের ভিতরে রয়েছে এলিসিন। যে ব্যাকটেরিয়া কারণে গলা ব্যাথা হয়ে থাকে সেই ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে এলিসিন। এটি কাঁচা খেতে পারেন আবার রান্না করে খেতে পারেন।
*মুখে দুই একটি লবঙ্গ রাখতে পারেন মাঝে মাঝে। একপর্যায়ে নরম হয়ে যাওয়ার পর চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন। লবঙ্গ গলা ব্যথা দূর করার জন্য বেশ উপকারী। এই ছিল আমাদের ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ঘরোয়া ওষুধ।
গলা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
গলা ব্যাথা হলে খাবার গিলতে কষ্ট হয়। গলার প্রদাহ এবং যন্ত্রণার কারণে গলা ব্যথা হয়। চিকিৎসকাদের ভাষায় গলা ব্যথার পারিভাষিক নাম হলো ফ্যারিঞ্জাইটিস। ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস উভয়ের সংক্রমণের কারণে এটি ঘটে থাকে। সাধারণত ভাইরাস সংক্রমণ সীমাবদ্ধ ও এর উপসর্গ অনুসারে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের জন্য ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গলা ব্যথা অসংক্রমণ কারণে হতে পারে। যেমন: ধূমপান, তামাক সেবন,, শুষ্ক বাতাস, বায়ু দূষণের ফলে সৃষ্ট অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
গলা ব্যথার ঔষধ এর নাম
গলা ব্যথার জন্য বেশ একটি ভালো ওষুধ হল ইফিক্স 100mg ট্যাবলেট। ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমনের জন্য ব্যবহার হয়। সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়াকে বৃদ্ধি পেতে বাধাগ্রস্থ করে। অর্থাৎ এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে।
শেষ কথা
উপরের ঢক গিলতে গলা ব্যাথার ওষুধ, গলা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার, গলা ব্যাথার ঔষধের নাম, ও ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে গলা ব্যথা দূর করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আমাদের এই আর্টিকেলটি থেকে আপনারা অনেক অজানা কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়াও অন্যান্য সব তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন অথবা নিচে গিয়ে কমেন্ট করুন ধন্যবাদ।