ফিতরাত অর্থ কি ? ফিতরা কার উপর ওয়াজিব
প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদের সাথে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আলোচনা করা হবে ফিতরাত শব্দের অর্থ কি? ফিতরা কার উপর ওয়াজিব। আপনারা অনেকেই জানেন না তাই আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্যই। বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ফিতরাত অর্থ কি
ফিতরাত শব্দটিকে শায়েক মোহাম্মদ আকরাম নদবী সাহেব ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন নেচার(nature)হিসেবে।যার অর্থ বাংলায় প্রকৃতি। এখানে প্রকৃতি বলতে ইনভারমেন্ট(ENVIRONMENT) কে বুঝানো হয়নি , এখানে বুঝানো হয়েছে মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যকে। ইসলামের মানুষের বৈশিষ্ট্যের প্রকৃতির গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলাম ধর্মকে ফিতরাতি ধর্ম বলা হয়। এর অর্থ ধারা বুঝা যায় যে ইসলাম ধর্মের মধ্যে বিন্দু পরিমাণ কোন আর্টিফিশিয়াল ইনফ্লুয়েন্স নেই। যা অন্যান্য সব ধর্মের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। তাই ইসলাম ধর্ম ব্যতিক্রম ধর্ম শান্তি ধর্ম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম। ইসলাম ধর্ম দুনিয়ার ও আখিরাতের উভয় ধরনের পথ দেখায়।
ফিতরাত মানুষের অন্যতম এক বৈশিষ্ট্য। ফিতরাত ইসলামের আকিদা ও বিধান বুঝতে মানুষের কষ্ট কম হয়। যে ব্যক্তির ফিতরাত শেষ হয়ে যায়নি সে সাধারণভাবেই সে ব্যক্তির ইসলামের প্রতি ঝোক থাকবে।প্রত্যেক মানুষই ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে এ কথা বলেছে আল্লাহর রাসুল। পরে পারিবারিক অথবা পারিপার্শ্বিক প্রভাবের কারণে সে ব্যক্তি প্যাগান বা মূর্তি পূজারী হয়ে যায় ও শিরক করে বসে।
সর্বোপরি পবিত্র কুরআন শরীফ আমাদের ফিতরাতকেই জাগ্রত করার চেষ্টা করেছে। একমাত্র আল্লাহ তাআলার সবকিছুই তার অনুগ্রহ,আমাদের সবকিছু কৃতজ্ঞতায় তার প্রতি নিবেদিত।
ফিতরা কার উপর ওয়াজিব
ফিতরা বা ফিতরা হল একটি আরবি শব্দ। যাকাতুল ফিতরা নামে ইসলামে পরিচিত বা সাদাকাতুল ফিতরা নামে পরিচিত। এখানে ইসলামের ভাষায় ফিতরা বলতে সকালের খাদ্যদ্রব্য কে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ রোজাদার গন রোজা ভঙ্গ করেন। যাকাতুল ফিতরা বলা হয় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিব অসহায়দের মাঝে রোজাদারদের দান করাকে বুঝায়। রোজা রাখার পর সন্ধ্যায় ইফতারের সময় বা সকালে খাদ্য গ্রহণ করা হয়। তাই সিয়াম বা রমজান মাস শেষে এই এই দানকে যাকাতুল ফিতরা বা সকালের আহারের যাকাত বলা হয়।
সাদাকাতুল ফিতর সকলের জন্য আদায় করা ওয়াজিব মুসলমান নারী, পুরুষ, ছোট, বড়, সকলের ক্ষেত্রেই। একটি হাদিসে এসেছে যে ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু বলেছেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু স্বীয় উম্মতের ক্রীতদাস ও স্বাধীন, নারী পুরুষ, ছোট বড় সকলের উপর নির্ধারিত মাথাপিছু পরিমান খেজুর বা সব যাকাতুল ফিতরার হিসেবে ওয়াজিব করেছেন। ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পূর্বেই তা আদায় করা নির্দেশ দিয়েছেন।
ঈদের সুব্হে সাদেকের পূর্বে কোন ব্যক্তি যদি মারা যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়। অনুরূপভাবে সুবহে সাদেকের পরে যদি কোন বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে তাহলে তার ক্ষেত্রে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়। তবে কোন বাচ্চা যদি সুবহে সাদেকের পরও জন্ম গ্রহণ করে তাহলে তার পক্ষ থেকে ফিতরা ওয়াজিব। সাদাকাতুল ফিতরা হলো জানের সদকা মালের নয়। যদি কোন ব্যক্তি রোজা আদায় করতে সক্ষম না হয় তাহলে তার ক্ষেত্রে ফিতরা ওয়াজিব। অর্থাৎ সকল জীবিত মুসলমানদের জানের সাদাক্কা আদায় করা ওয়াজিব।