দাঁতের শিরশিরানি দূর করার ঔষধ

যাদের দাঁতের শিরশিরানি ভাব ও ব্যথা রয়েছে তারা খুঁজতে থাকেন যে, কোন ধরনের ওষুধ খেলে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্যই। ওষুধের পাশাপাশি ঘরোয়া উপায়ও এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন । 

দাঁতের শিরশিরানি দূর করার ঔষধ


দাঁতের যত ধরনের সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হলো দাঁতের শিরশিরানি। আমরা সকলেই কমবেশি এর ভুক্তভোগী। সাধারণত দাঁতের ক্ষয় গভীরে হলেশিরশিরানি অনুভূতি পেয়ে থাকি।

 

মানুষের দাঁতে তিনটি স্তর থাকে। তার মধ্যে একেবারে উপরের স্তরকে বলা হয় এনামেল। এরপর দ্বিতীয় স্তরকে বলা হয় ডেন্টিন এবং সর্বশেষ স্তরকে বলা হয় পালভ। আর উভয় অংশটিকে বলা হয় সিমেন্টাম।




সিমেন্টামের মাঝেতে আবদ্ধ অবস্থায় থাকে চারদিকে দাঁতের মজ্জা আর পালভ  হলো ডেন্টিন। যদি কোন কারণবশত পালভে  কোন ইনফেকশন বা ইনফ্লামেশন হয় তখনই আমরা দাঁতের শিরশিরানি  অনুভূতি পেয়ে থাকি বা পাইলপাটিস রোগে আক্রান্ত হই।
 


এর ব্যথা এমন  ধরনের যা মানুষকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে বাধ্য করতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। 


ডেন্টিস্টরা এ সমস্যাকে টুথ সেনসিভিটি ও বলে থাকে। এ সমস্যা থেকে প্রতিকার পেতে হলে প্রথমেই আপনি আপনার  টুথপেস্ট পরিবর্তন করুন।  ডিসেনসিটাইজিং টুথপেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। কারণ সাধারণ টুথপেস্ট এর চেয়ে এ ধরনের টুথপেস্টে বিশেষ উপাদান থাকে। যা দাঁতের উন্মুক্ত স্নায়ু  গুলোতে আবারোন  সৃষ্টি করে।

 

এ রোগে যারা ভুক্তভোগী তারা পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাবেন। এতে করে দাঁতের ব্যাথা দূর হওয়ার পাশাপাশি কিছু আরাম পাবেন এ সময় নরম ব্রাশ ব্যবহার করবেন।

 


তাছাড়াও লবণ ব্যবহার করতে পারেন লবণ ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধক। একই সাথে প্রদাহ  কমাতেও বেশ কার্যকরী। এর জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে দুইবার উষ্ণ পানিতে লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করতে পারেন।  সাথে ফুটন্ত পানিতে তেজপাতা দিতে পারেন।  এতে করে বেশ ভালো ফলাফল পাবেন।



লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন দাঁতের শিরশিরানি ও ব্যাথা দূর করতে। লবঙ্গ, হলুদ, সরিষা তেলের পেস্ট তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন এই আইটেমগুলো পরিবর্তন করে যে কোন একটি বেছে নিয়ে হাতের আঙ্গুল দিয়ে দাঁত ও মারিতে  লাগিয়ে আলতোভাবে মেসওয়াক করতে পারেন। উপাদান গুলো এন্টি ব্যাকটেরিয়াল দ্বারা  সম্পন্ন।  তাই উপাদানগুলো ব্যবহার মাধ্যমে দাঁতের ব্যথা ও শিরশিররানী ভাব দূর করা সম্ভব।



দাঁতের শিরশিরানি দূর করার উপায়


মাঝে মাঝে টক, গরম, মিষ্টি খাবার বা ঠান্ডা খাবার খেলে দাঁতের শিরশিরানি অনুভূতি সৃষ্টি হয়। যাদের এ ধরনের সমস্যা আছে তারাই একমাত্র বোঝেন এর যন্ত্রণা কেমন। এ থেকে ব্যাথার সৃষ্টি হয়।

 

এ সমস্যাটি দাঁত কম মজবুত হওয়ার লক্ষণের প্রকাশ পায়। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই নানান ধরনের ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন বা বিভিন্ন ধরনের টুথপেস্ট পরিবর্তন করতে করতে হাঁপিয়ে গেছেন।উন্নত মানের টুথপেস্ট ব্যবহার করলে অনেকটাই স্বস্তি পাওয়া যায়। তবে এর পাশাপাশি কিছু বিষয় মেনে চললে ঘরে বসে তাহলে এই শিরশির ভাব দূর করা যায়।

 


*আধা  চা চামচ লবণ মিশ্রণ করুন এক কাপ উষ্ণ গরম পানিতে। এই লবণ মিশ্রিত পানি দিয়ে গড়গড়া ও কুলি করুন। লবণ মিশ্রিত পানি বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে গেলে ব্যথা হতে পারে। তারপরও কষ্ট করে কয়েক মিনিটের জন্য এই পানি মুখের ভিতরে রাখুন। কয়েক মিনিট পর ফেলে দিয়ে নতুন পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধৌত করুন। এ কাজটি প্রতিদিন দুইবার করলে দ্রুত শিরশির ভাব থেকে রেহাই পেতে পারেন।



*একটি রসুন পেস্ট করে তার মধ্যে দুই থেকে তিন ফোটা পানি মিশিয়ে এবং সামান্য খাবার লবণ মিশিয়ে দাঁতের আক্রান্ত স্থানে তৈরি কৃত পেস্ট  লাগিয়ে রাখুন।এ ভাবে কয়েক মিনিট রেখে দিন। এর পাশাপাশি লবণ পানি দিয়ে মুখ কুলি করলে আরো দারুন কাজ করবে।  প্রতিদিন দুইবার এ কাজটি করবেন।   


*আরেকটি উপায় রয়েছে ঝামেলা বিহীন সেটি হল একটি রসুনের কোয়া  কেটে ৭ থেকে ১০ মিনিট দাঁতের আক্রান্ত স্থানে লাগাতে থাকুন। এরপর হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এ কাজটিও প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার করতে পারেন। এর ফলে দাঁতের শিরশিরানী বা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। 



দাঁতের গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়


দাঁতের শক্ত জায়গা গর্ত হয়ে যাওয়াকে বলা হয় cavity . এ সমস্যাটি দাঁতের ব্যাকটেরিয়া জনিত কারণে হয়ে থাকে। এজন্য প্রতিদিন খাবার খাওয়ার পর দাঁত পরিষ্কার করতে হবে। 


এই ব্যাকটেরিয়া থেকে সৃষ্টি হয়  দাঁতের গর্ত বা দাঁতের ক্ষয়। শুরুতেই এ সমস্যার জন্য দ্রুত চিকিৎসা না করালে দাঁতেরগর্ত  বা দাঁতের ক্ষয় দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে।


*উষ্ণ গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলি করলে দাঁতের ক্ষয় বৃদ্ধি পেতে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। কারণ লবণ পানিতে রয়েছে এসিড যা মুখের পিএইচ স্তরকে নিরপেক্ষ করে। পাশাপাশি ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে দেয় না মুখের ভিতর।


*লেবু লেবু ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। একটু লেবু নিয়ে মুখে চালাতে থাকুন।


* নিম কাঠ  দিয়ে দাঁতের মেসওয়াক করতে পারেন। কারণ নিমে রয়েছে ফাইবার জাতকে প্লাগ হতে দেবে না। এটি ব্যবহারে দাঁত ভালো রাখে। যদি পারেন কয়েকটি নিমপাতা চিবিয়ে বুক ধৌত করে ফেলুন। এটি একটি কষ্টকর বিষয়।  কারণ অনেক তেতো হয়ে থাকে নিমপাতা তারপরও এটা দাঁতের ব্যাকটেরিয়া ও ক্যাভিটি সারাতে খুব ভালো কাজ করে।


এছাড়াও ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খেতে হবে। যে খাবার গুলোর মধ্যে ভিটামিন ডি রয়েছে সে খাবারগুলো বেশি পরিমাণে খাবেন। মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খাবেন না যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলবেন , তিল  অথবা নারিকেলর  তেল দশ মিনিট দাঁতেলাগিয়ে রাখুন। তারপর গড়গড়া বা কুলি করে মুখ ধুয়ে ফেলেন। লবঙ্গ বেশ কার্যকর মাঝে মাঝে দুইটি লবঙ্গ চাবিয়ে খেয়ে ফেলবেন।

 

শেষ কথা

উপরে নির্দেশিত নিয়ম গুলো মেনে চললে দাঁতের শিরশিরানি  দূর করা সম্ভব। দাতের ব্যথা ও শিরশিরানি  খুব কষ্ট ও যন্ত্রণাদায়ক। দাঁত একটি সেনসিটিভ বিষয়। এর জন্য আমরা সবসময় দাঁতের প্রতি একটু বেশি যত্নশীল হব। প্রিয় পাঠক এছাড়াও অন্যান্য সব তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন অথবা নিচে গিয়ে কমেন্ট করুন ধন্যবাদ। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url