এনজিওগ্রাম করতে খরচ কত পড়ে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে
প্রিয় পাঠক এনজিওগ্রাম করতে খরচ কত পড়ে হৃদ রোগ ইনস্টিটিউটে। সে সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব। এনজিওগ্রাম কোথায় করবে? করতে কত খরচ হয় এবং কোন কোন হাসপাতালে এনজিওগ্রাম করা যায়। বাংলাদেশে সরকারিভাবে ও বেসরকারিভাবেএনজিওগ্রাম করা হয়।সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণভাবে পড়তে হবে।
এনজিওগ্রাম করতে খরচ কত পড়ে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে
এনজিওগ্রাম করার পূর্বে আমরা এনজিওগ্রাম সম্পর্কে একটু ধারণা নিব। সাধারণ মানুষরা এনজিওগ্রাম সম্পর্কে একটু অপরিচিত তারা সবাই হার্টে রিং পরানো বিষয় জানে। মূলত এনজিওগ্রাম ও হার্টে রিং পরানো একই কথা।
এনজিওগ্রাম বলতে: এটি হলো একটি ডায়াগনস্টিক মেডিকেল ইমেজিং পদ্ধতি যা মানব শরীরের বিভিন্ন অংশের রক্তনালী পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়। এই পরীক্ষাটি সাধারণত হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্কে ব্যবহৃত হয়। এটিকে এনজিওগ্রাম বা এনজিওগ্রাফি নামেও পরিচিত। এটি ব্যবহার করা হয় একটি ক্যাথেটারের মাধ্যমে রক্তপ্রবাহে একটি বিশেষ রঞ্জক কনট্রাস্ট উপাদান আরো স্পষ্টভাবে বলতে গেলে ইনজেকশন এর সাথে জড়িত যেটি বাহুর ধমনীতে ও সাধারণত কুঁচকিতে প্রবেশ করানো হয়।
অনেকে এনজিওগ্রামকে একটি হাসপাতালের সেটিং বলে থাকে। হাসপাতালের সেটিংটি সঞ্চালিত এবং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে কমপক্ষে৩০ থেকে ৬০ মিনিট সময় লাগে।রোগীর উপর প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে রোগীকে শিথিল করতে একটি হালকা উপশমকারী দেওয়া যেতে পারে এবং কোন জটিলতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়া যেমনঃ রক্তপাত বা বিপরীত উপাদানে এর পাশাপাশি আর একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হয় রোগীর এলার্জির প্রতিক্রিয়া কেমন সে বিষয়ে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
আরো সহজ ভাষায় বলতে গেলে এনজিওগ্রাম হলো রক্তনালীরএক্সরে। এর শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হয় হার্টের ক্ষেত্রে। তাই আরও সহজ ভাবে বলতে গেলেআমরা বলতে পারি যে হার্টের রক্তনালির ভেতরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে যে এক্সরে ইমেজিং করা প্রয়োজন হয় তাকে এনজিওগ্রাম বলা হয়।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এনজিওগ্রাম করতে অন্যান্য হাসপাতালের তুলনায় কম খরচ হবে।কেননা এটি একটি সরকারি হাসপাতাল। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এনজিওগ্রাম করতে আপনার খরচ পড়বে প্রায় ৬ ০০০ টাকা থেকে ৭ হাজার টাকার মতন। তবে এনজিওগ্রাম করানোর পূর্বে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে ভালোভাবে কথা বলে জেনে নিবেন।
বাংলাদেশে যে সকল সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এনজিওগ্রাম করা হয় সে সব হাসপাতালের লিস্ট ও খরচের তালিকা নিচে দেওয়া হল:
সরকারি হাসপাতাল সমূহের নাম ও খরচ:
*বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। ১৫০০০ টাকা। এর কম বা বেশি হতে পারে। তো বিদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রে এর বেশি হতে পারে।
*ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজেস। এই হাসপাতালে রেগুলার এনজিওগ্রামের জন্য ১০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে এবং সহ করোনারি এনজিওগ্রামের জন্য ১৫০০০ টাকা খরচ হতে পারে।
*ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
*কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতাল। ১২ হাজার থেকে ১৫০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
*শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ৬০০০ টাকা থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত।
*চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:উল্লেখিত হাসপাতালের এনজিও গ্রামের খরচের তালিকা গুলো যে এমনই হবে বিষয়টি তেমন নয়। এর চেয়ে বেশি বা কম হতে পারে। সেজন্য হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে নিবেন।
বেসরকারি হাসপাতাল সমূহের নাম ও খরচ:
*স্কয়ার হসপিটাল। রেডিয়াল অ্যাঞ্জিওগ্রাফি 17,000 টাকা পেরিকার্ডিয়াল ট্যাপিং/পেরিকার্ডিওসেন্থ-17,300/20,800/22,800/42,800 টাকা
*ইউনাইটেড হসপিটাল লিমিটেড।১৫ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা বা তার চেয়ে বেশি বা কম হতে পারে।
*এভারকেয়ার হাসপাতাল ঢাকা। এই হাসপাতালের এনজিওগ্রাম পদ্ধতির খরচ বিভিন্ন রকম হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের এনজিওগ্রামের উপর নির্ভর করে। তাই সুস্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না খরচের পরিমাণ।
* অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকা। জানা নেই।
* ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট।রেনাল এনজিওগ্রাম (সিডি সহ ওয়ার্ডে 2 দিন)- 10,000 টাকাপেস মেকার (অস্থায়ী) (জরুরি)-9,000 টাকা। PTMC (ওয়ার্ডে 3 দিন)- 35,000 টাকা।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:সরকারি হাসপাতালের তুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে খরচ তুলনামূলক অনেক বেশি। উল্লেখিত হাসপাতালের এনজিও গ্রামের খরচের তালিকা গুলো যে এমনই হবে বিষয়টি তেমন নয়। এর চেয়ে বেশি বা কম হতে পারে। সেজন্য হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে নিবেন।
কোলনস্কপি করতে খরচ কতো
এই পরীক্ষাটির খরচ হতে পারে ৪ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে এর দাম কম বা বেশি হতে পারে সময় এবং স্থানের উপর নির্ভর করে।
ইকোকার্ডিওগ্রাফি খরচ কত
ইকোকার্ডিওগ্রাফি এর খরচ ২০০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এটি দক্ষ ল্যাব টেকনিশিয়ান ও উন্নতযন্ত্রপাতি দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার ফলে দাম বেশি কম হয়। অর্থাৎ সময়ও স্থান ভেদে দামের তারতম্য করতে পারে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক উপরের আলোচনা থেকে আশা করি আপনারা আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসম্পর্কে জানতে পেয়েছেন। এছাড়াও অন্যান্য সব তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিচে গিয়ে কমেন্ট করুন।