শ্যামলী কিডনি হাসপাতাল
বিবিসি নিউজ বাংলা, ঢাকা রিপোর্টার সানজিদা চৌধুরীর ৯ই মার্চ ২০২৩ সালের বাংলাদেশের একটি সরকারি সমীক্ষায় দেখে বলেন একবছর থেকে অন্য বছরের ব্যবধানে কিডনি রোগের সংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি দুঃখের বিষয় হলো একশোর ভিতর ৮০ শতাংশ লোক তাদের চিকিৎসা খরচ বহন করতে অক্ষম।
কেননা চিকিৎসা খরচ খুবই ব্যয়বহুল। বেশিরভাগ রোগীরা ডায়ালিসিস করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন।ডায়ালিসিসের খরচ এত পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে যা তাদের বহন করা খুব কষ্টকর। খরচ নাগাল সীমার বাহিরে।ডায়ালিসিস দীর্ঘ সময় করতে হয় এ কারণে অনেক অর্থ ব্যয় হয়।ভুক্তভোগী রোগীদের সামর্থ্যের বাহিরে।
শ্যামলী কিডনি হাসপাতাল
শ্যামলী কিডনি হাসপাতাল ঢাকায় অবস্থিত। এর অপর নাম: সেন্টার ফর কিডনি ডিজেসেস এন্ড ইউরোলজি হসপিটাল(ckdu) .
স্থান শ্যামলী কিডনি হাসপাতাল রোড নং০৩ , বাড়ি নং শ্যামলী ৩২ ঢাকা- ১২০৭।
এ হসপিটালে বিস্তারিত জানতে নিম্নের নাম্বারগুলোতে যোগাযোগ করতে পারেন।
+880-1777685821, +880-1777685822
+88-02-48114430, +88-02-48114570
শ্যামলী কিডনি হাসপাতালে যেসব রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়
ইউরোলজি রোগসমূহ চিকিৎসা
কিডনিতে পাথর, কিডনিতে ক্যান্সার, পানি জমা, টিউমার ও পাথর বা দক্ষযাত্রীয় রোগ, অন্ডকোষ ক্যান্সার বা টিউমার, প্রোস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সার জাতীয় রোগ বা টিউমার, অন্ডকোষে আঘাত জনিত রোগের চিকিৎসা, পুরুষত্বহীনতা ও পুরুষের যৌনাঙ্গের জন্মগত সমস্যার পাশাপাশি মহিলাদের ও অনিয়ন্ত্রিত প্রসাব ও সর্দি - কাশি দিলে সব বের হওয়ার চিকিৎসা।
ইউরোলজি রোগের অন্তর্ভুক্ত সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো
এ রোগের প্রধান সমস্যা হল ঘন ঘন প্রসাব করা, চিকন নারগুলোতে প্রসাব হওয়া ,যাস্ট আস্তে প্রস্রাব হওয়া, অনেক সময় ফোটায় ফোটায় প্রসব হয়ে থাকে। থেমে থেমে থাকে প্রসাবের রাস্তায় প্রচুর পরিমাণ জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রসাব রাস্তায় পুঁজ বের হয় এর পাশাপাশি প্রসাবের রাস্তায় রক্ত ঝরে থাকে।
আরো কিছু উপসর্গরয়েছে সেগুলো বলে দিচ্ছি। প্রসবের রাস্তায় পাথর হয়ে থাকে, একেবারে ক্লিয়ার হয় না, প্রস্রাব শেষ করার পরও মনে হয় যেন অনেকক্ষণ ধরে প্রস্রাব ঝড়তে থাকে ,দ্রুত বীর্যপাত হয়ে যায়, রাতে বিছানায়ও অনেকের প্রসাব পড়ে, রাতে একাধিকবার প্রস্রাব করে থাকে, প্রসাব শুরু করতে দেরি হয়ে যায় যেতে যেতে অনেকের প্রসাব পড়েও যায়।
ঢাকা শ্যামলী কিডনি হাসপাতালে কিডনি রোগীদের বিশেষ চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হলো কিডনি প্রতি স্থাপন। রোগীদের কিডনি পুরোপুরি ড্যামেজ হয়ে গেছে অর্থাৎ যাকে বলা হয় স্টেজ ৫এসকল রোগীদের কিডনি প্রতি স্থাপন করা অতীব জরুরী। এ ধরনের হাসপাতালেই আপনি করাতে পারবেন কিডনি প্রতি স্থাপনের মতো চিকিৎসা। ১২ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে কিডনি প্রতি স্থাপন রোগী বাসায় যেতে পারেন।
সুখবর হলো কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরে কিডনি ড্যামেজ রোগীরা স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপনে ফিরতে পারেন।এতে করে নির্দিষ্ট সময়ের পরপর আর ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয় না। গত এক বছরে প্রায় ১২১ টি স্থাপন করে থাকে এই সুনামধন্য হাসপাতাল হাসপাতালের সফলতা শুনলে আপনি অনেকটাই খুশি হবেন যে ৯৪% পর্যন্ত সফলতার হার।
কিডনিতে পাথর হলে এ হাসপাতালেও অত্যাধুনিক মেশিনের মাধ্যমে ছিদ্র করে কিডনিতে যে পাথর হয় সেগুলো সম্পূর্ণভাবে পৃথক করার মাধ্যমে অপসারণ করা হয়।পূর্বের মতো অপারেশন করে কিডনির পাথর বের করতে হয় না যা এই শ্যামলী কিডনি হাসপাতালে করানো হয়।
কি কি কারনে মানবদেহের কোন পদার্থ থেকে পাথরের সৃষ্টি হয় তা বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে গবেষণার মাধ্যমে নির্ণয় কার্য সম্পন্ন করা হয়। অর্থাৎ পুনরায় যাহাতে পাথর না সৃষ্টি হয় তার প্রতিরোধ করা যায় কিভাবে এটি তারা গুরুত্ব সহকারে দেখেন। গত এক বছরের এই হাসপাতালের প্রায় ৪০০০ রোগের মত অপারেশন করা হয়েছে যার সফলতা হয়েছে ৯৯% যেটা আসলেই প্রশংসাজনীয়।
ESWL এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। চিকিৎসা করানোর পদ্ধতিটি হল কোন ধরনের কাটা ছেঁড়া ব্যতীত কিডনির পাথর ক্রাশ করে অথবা গুড়া করে যা করে প্রসাবের সাথে বের হয়ে যায়।যা বিগত এক বছর প্রায় 600 রুগীর মতো এ ধরনের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। এ ধরনের চিকিৎসা সেবায়ক তাদের সফলতার হার আকাশচুম্বু ৯৯শতাংশ।
.
URS and ICPL পদ্ধতিতে কিডনিতে পাথর জমলে তা উন্নত মেশিনের মাধ্যমে নির্মূল করা হয় এতে খরচ কিছুটা কম হয় কারণ এ ধরনের অপারেশনের জন্য রোগীকে প্রতিনিয়ত হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন পড়ে না ধরেন সকালবেলা করলে দুপুরে চলে যেতে পারে এর সংখ্যা হবে কয়েক শতাধিক। সফলতার হার শতকরায় ৯৯ শতাংশ।
Cysolitholapexy এটিকে বলা হয় মূত্র থলিতে পাথর হওয়া যা অপারেশনের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে পাথর বের করা হয়। যার ফলে কোন ধরনের কাটা ছেড়ার প্রয়োজন হয়নি।এ সমস্ত ক্ষেত্রে রোগীকে ছয় থেকে সাত ঘন্টা পর বাসায় যেতে পারে।
TURP: প্রটেস্ট গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়ার ফলে পুরুষদের যৌনাঙ্গ ও মূত্রথলি থেকে প্রসাব বের হবার রাস্তা সরু হয়ে যায়। যার ফলে প্রসাব করতে কষ্ট হয়।প্রসাবের পরিমাণ অল্প হয় একেবারে কমে যায় একপর্যায়ে ক্যাথেটার মাধ্যমে প্রসব বের করতে হয়।
মূত্রথলিতে চাকা চাকা বোধ হয় এবং প্রসাব করার সময় রক্ত বের হয় তাকে বলা হয় মূত্রথলিতে ক্যান্সার যার নাম টিউআরবিটি কোনরকম সার্জারি ছাড়াই মূত্রথলির ক্যান্সার অপারেশন করা হয়ে থাকে।
পাইলোপ্লাস্টি:যেসব ব্যক্তিরা জন্মগতভাবে কিডনালীতে বাধাগ্রস্থ হয়ে থাকে।এ সমস্ত রোগীদের বাধাগ্রস্ত কিডনি ধীরে ধীরে কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলার ফলে এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে তাহলে কিডনি সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।সে ক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে মুক্ত করে দেয়া হয় এতে করে কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক পর্যায়ে চলতে থাকে রোগীর আর কোন আগের মতো ব্যাথা থাকে না।
কিডনির সঠিক রোগ নির্ণয় করার জন্য কিডনি বায়োপসি করা হয় এর অর্থ হলো বড় নিডলের মাধ্যমে কিডনি থেকে টিস্যু নিয়ে পরীক্ষা করা। যে সকল রোগীদের ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয় তাদের মাথায় গলায় কাঁটাতার স্থাপন করা হয়ে থাকে এই ক্যাথেটারের মধ্য দিয়ে রোগী ডায়ালিসিস নিয়ে যেতে পারে যার ফলে হাসপাতালে থাকতে হয় না।
যাদের দুটি কিডনি সম্পূর্ণভাবে ড্যামেজ হয়ে যায় তাদের জন্য কিডনি প্রতি স্থাপনা করা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়। তাদের লক্ষণ গুলো দেখা যায় সেগুলো শ্বাসকষ্টবৃদ্ধি , পেটে পানি জমা ,হাত পা ফোলা, বমি হওয়া এ সকল রোগের পাশাপাশি কিডনি প্রতি স্থাপন করা প্রয়োজন হয়ে যায়। বের করা হয় যাতে রোগী স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কিডনি হাসপাতাল
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কিডনি হাসপাতাল বলতে বুঝায় কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশে।এটিকে বলা হয় দেশের বৃহত্তম ডালোসিস ও ট্রান্সপ্লান্ট স্টেশন সেন্টার।এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে এবং ২০০৩ সালের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। এখানে ইনডোর ও আউটডোর সিস্টেম রয়েছে।স্থান প্লট # ৫/২, সড়ক # ০১, সেকশন # ০২ মিরপুর, ঢাকা ১২১৬।
এখানে কিডনি চিকিৎসার পাশাপাশি ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশন রোগ শনাক্তকরণ প্রতিরোধ করুন এবং চিকিৎসার বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে পরিচালনা করা হয়ে থাকে।
কিডনি ফাউন্ডেশনে প্রতিদিন তিনটি শিফটে ডায়ালাইসিস করা হয়ে থাকে রোগীর ডায়ালাইসিস চার্জ ৬৫০ টাকা।কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন সার্জারি করতে খরচ হয় প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মত।
এই হাসপাতালে আউটডোর ইউনিট খোলা থাকে সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এছাড়া কনসালটেশন সার্ভিসটি খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত বিকেল ৫ থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
এখানে দুটি সিস্টেম ভর্তি রয়েছে। প্রত্যেক রোগীকে ভর্তির পূর্বে রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করতে হয়। একটি হলো ওয়ার্ড দ্বিতীয়টি কেবিন।ওয়ার্ডে থাকলে সে ক্ষেত্রে খরচ হবে ৫হাজার টাকা তা অগ্রিম দিতে হবে। আর যদি রোগী কেবিনে থাকে সেক্ষেত্রে খরচ হবে ১৫০০০ টাকা তা ও অগ্রিম প্রদান করতে হবে।
সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি
ঢাকা শ্যামলী কিডনি হাসপাতাল।সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি নামে পরিচিত। এর সংক্ষিপ্ত নাম হল সিকেডিইউ।
কিডনিতে পাথর হলে অপারেশন করতে কত টাকা লাগে
কিডনিতে পাথর বলতে বুঝায় আদতে এক ধরনের খনিজ পদার্থ যা সঠিক সোমবার ভিতর চিকিৎসা না করালে ইউরোলজিক্যাল ক্রিয়াকলাপে সমস্যা সৃষ্টি করে। এ ধরনের চিকিৎসা শুধুমাত্র করে থাকেন ইউরোলজিক্যাল চিকিৎসকগণ। খরচ হতে পারে ৬০০০০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। রোগীর কন্ডিশন উপর নির্ভর করে খরচ বেশি কম হতে পারে।
জাতীয় কিডনি হাসপাতাল কোথায়
জাতীয় কিডনি হাসপাতাল হল একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল। যার পূর্ণ নাম হলো জাতীয় কিডনি রোগও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট(NIKDU) প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০১ সালে ঢাকা শেরেবাংলা নগর থানায় অবস্থিত।
কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট কষ্ট ইন বাংলাদেশ
সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন ব্যয় ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা থেকে৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। আইসিইউ খরচ সহ। কিডনিদাতা চার দিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত হাসপাতাল থাকতে পারবেন ওষুধ খরচ সহ এই খরচের ভিতর।
কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ কে কি বলা হয়
এমনই একজন ডাক্তার কিডনির সকল ধরনের সমস্যা গুলি সমাধান করে থাকে এবং রোগীর অবস্থান অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসার সিদ্ধান্ত করে থাকেন অর্থাৎ বিশেষজ্ঞ কে বুঝায়।এক কথা বলতে গেলে কিডনি ডাক্তার কে নেফ্রোলজিস্ট বলা হয়।